Google search engine

সিনওয়ার হত্যাকাণ্ড: কে হবেন হামাসের পরবর্তী নেতা

ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের প্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ারের হত্যার পর নতুন নেতৃত্ব নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা। ইসরায়েলের হাতে নিহত সিনওয়ার ছিলেন ৭ অক্টোবরের হামলার মূল পরিকল্পনাকারী।

হামাসের রাজনৈতিক কার্যালয় জানায়, তাদের লড়াই চলবে এবং নেতাদের মৃত্যুর ফলে সংগঠন দুর্বল হবে না। সম্ভাব্য উত্তরসূরি হিসেবে মোহাম্মদ সিনওয়ার, মুসা আবু মারজুক, খালেদ মেশাল এবং খলিল আল হায়ার নাম শোনা যাচ্ছে।

উত্তরসূরি কে হবেন, সে ব্যাপারে সিনওয়ার নিজে থেকে কোনো পরামর্শ দিয়ে গেছেন কি না, তা স্পষ্ট নয়। সিনওয়ারের ছোট ভাই মোহাম্মদ, যিনি সামরিক শাখার কমান্ডার, তার নিরাপত্তা নিয়েও উদ্বেগ রয়েছে। অপরদিকে, খালেদ মেশাল আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচিত মুখ হলেও তার বিরুদ্ধে কিছু রাজনৈতিক জটিলতা রয়েছে।

গতকাল শুক্রবার হামাসের রাজনৈতিক কার্যালয় এক বিবৃতিতে সিনওয়ারের নিহত হওয়ার ঘটনা নিশ্চিত করে। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘হামাস প্রতিবারই আরও শক্তিশালী ও জনপ্রিয় হয়েছে। মুক্ত ফিলিস্তিন প্রতিষ্ঠার পথে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের যাত্রা অব্যাহত রাখতে এই নেতারা একেকজন আদর্শ হয়ে রইবেন।’

সিনওয়ারের সম্ভাব্য উত্তরসূরিদের অন্যতম মুসা আবু মারজুক। হামাসের রাজনৈতিক শাখার এই উপপ্রধান সংগঠনটি প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করেছিলেন। সিনওয়ারের স্থলাভিষিক্ত হওয়ার সম্ভাবনা তাঁরও প্রবল। যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরো (এফবিআই) তাঁকে ‘সন্ত্রাসী’ হিসেবে চিহ্নিত করার আগপর্যন্ত দেশটিতে পাঁচ বছর ছিলেন তিনি। পরে সেখান থেকে তাঁকে প্রত্যাবর্তন করতে হয়।

হামাসের প্রভাবশালী নেতাদের একজন খালেদ মেশাল। তিনি সংগঠনের রাজনৈতিক শাখার সাবেক প্রধান। সিনওয়ার হত্যাকাণ্ডের পর হামাসের হাল তিনিও ধরতে পারেন। খালেদ মেশাল আন্তর্জাতিকভাবে সুপরিচিত ব্যক্তি। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার, জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ দ্বিতীয় ও ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির সঙ্গে অতীতে তিনি বৈঠক করেছেন।

সিনওয়ারের সহকারী খলিল আল হায়া তাঁর উত্তরসূরি হওয়ার অন্যতম শক্তিশালী প্রার্থী। ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠায় সম্প্রতি কায়রোয় অনুষ্ঠিত আলোচনায় হামাসের প্রধান মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করেন তিনি। কাতারে থেকে তিনি কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকেন।

এই নেতাদের মধ্যে খালেদ মেশাল ও আল হায়া অনেক বছর ধরেই হামাসের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের দুজন হিসেবে কাজ করছেন। অতীতে তাঁদের হত্যায় কয়েক দফা চেষ্টা চালিয়েছে ইসরায়েল। তবে সফল হয়নি।

শুধু ইসমাইল হানিয়া বা ইয়াহিয়া সিনওয়ার নন, ইসরায়েল আগেও হামাসের একাধিক নেতাকে হত্যা করেছে। তাঁদের মধ্যে ২০০৪ সালে হত্যা করা হয় সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা শেখ আহমেদ ইয়াসিনকে। এ হত্যাকাণ্ডের কয়েক সপ্তাহ পরই নিহত হন তাঁর উত্তরসূরি আবদেল আজিজ রানতিজি।

প্রতিষ্ঠার পর হামাস এভাবে কয়েকজন শীর্ষ নেতাকে হারালেও বারবারই ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হয়েছে। তবে এ মুহূর্তে তারা কীভাবে আবার সংগঠিত হবে, তা নিয়ে বলা কঠিন। কেননা, সিনওয়ারের শাসনাধীনে হামাসের সাংগঠনিক কাঠামোয় কতটা পরিবর্তন এসেছে, সেটি পরিষ্কার নয়।

হামাসের দুই শীর্ষ নেতা নিহত হওয়ার পর সংগঠনে নিজের ক্ষমতা সুসংহত করেছিলেন ইয়াহিয়া সিনওয়ার। গাজায় হামাসের একক সিদ্ধান্তপ্রণেতা হিসেবে তিনি অবির্ভূত হন।

গত জুলাইয়ে ইরানের তেহরানে হামলায় নিহত হন ইসমাইল হানিয়া। তিনি নিহত হওয়ার পর সিনওয়ারই ছিলেন হামাসের সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ নেতা। হানিয়া হত্যাকাণ্ডে ইসরায়েলকে অভিযুক্ত করেছে ইরান। তবে এ নিয়ে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী কোনো মন্তব্য করেনি।

- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ