শনিবার (২২ জুলাই) ঝালকাঠিতে একটি যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পুকুরে পড়ে ১৭ জন নিহত হয়েছেন। এ দুর্ঘটনায় আহত হন কমপক্ষে ৩০ জন। আর এর ঘটনার পর সড়ক নিরাপত্তা নিয়ে আবারো প্রশ্ন উঠেছে।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে রোববার (২৩ জুলাই) এসসিআরএফ তাদের পর্যবেক্ষণের ফলাফল প্রকাশ করেছে। সড়ক দুর্ঘটনার পেছনে প্রায় ১৬টি প্রধান কারণ চিহ্নিত করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
সংগঠনটির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে সারাদেশে ২ হাজার ৭৮১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২ হাজার ৮৯৮ জন মারা গেছে এবং ৪ হাজার ৭২০ জন আহত হয়েছে।
এর মধ্যে ১ হাজার ৭৯টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১ হাজার ৮৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।
ইউএনবি এর তথ্যানুযায়ী জানা যায়, এসসিআরএফের চিহ্নিত সড়ক দুর্ঘটনার ১৬টি প্রধান কারণ হলো ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন; অদক্ষ, অসচেতন ও অসুস্থ চালক; বিপজ্জনক গতিতে গাড়ি চালানো; প্রচলিত আইন ও নিয়ম না মেনে ওভারটেকিং।
এসসিআরএফের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, সড়ক দুর্ঘটনা রোধে সরকারের নীতিনির্ধারণী সংস্থাগুলো আন্তরিক। তবে সংশ্লিষ্ট সরকারি প্রতিষ্ঠানের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীর জবাবদিহিরও অভাব রয়েছে।
পরিবহন খাতে মালিক-শ্রমিক নেতাদের প্রভাব, জনপ্রতিনিধিসহ রাজনৈতিক নেতাদের হস্তক্ষেপ এবং চালক, শ্রমিক, যাত্রী ও পথচারীদের মধ্যে সচেতনতার অভাবও দুর্ঘটনার জন্য দায়ী।
কোনো নির্দিষ্ট সাপ্তাহিক ছুটি এবং কাজের সময় নির্দিষ্ট না থাকায় ড্রাইভার ও হেলপার ক্লান্ত থাকা; জরাজীর্ণ রাস্তা; জাতীয় মহাসড়ক এবং আন্তঃজেলা সড়কে অনেক বেশি ঝুঁকিপূর্ণ মোড়; দূরপাল্লার রাস্তায় বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহৃত বিপুল সংখ্যক মোটরসাইকেল; হাইওয়েতে ধীর গতিতে চলা তিন চাকার গাড়ি; অদক্ষ নাবালক ও তরুণদের মোটরসাইকেল চালানো দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ।
এছাড়া বিআরটিএর সক্ষমতার অভাব এবং সংশ্লিষ্ট অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারীর অনিয়ম ও দুর্নীতি; দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা এবং হাইওয়ে পুলিশ ও অন্যান্য সম্পদের অভাব; সাধারণ জনগণের মধ্যে ট্রাফিক আইন সম্পর্কে সচেতনতা ও জ্ঞানের অভাব; চালক ও পথচারীদের ট্রাফিক আইন অমান্য করার প্রবণতা; বিদ্যমান আইন প্রয়োগে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের শিথিলতা; এবং টার্মিনাল ও মহাসড়কসহ বিভিন্ন সড়কে যানবাহন থেকে চাঁদাবাজিও দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ বলে প্রতিষ্ঠানটি তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করে।