রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক শক্তি কমিশন- রোসাটোমের মহাপরিচালক অ্যালেক্সি লিখাচেভ বলেছেন, শত বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ এগিয়ে চলছে এবং আগামী সেপ্টেম্বরেই বাংলাদেশে আসবে এই প্ল্যান্টের জন্য পারমাণবিক জ্বালানি (নিউক্লিয়ার ফুয়েল)।
সোমবার (৩১ জুলাই) সকালে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি এ কথা বলেন। পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
সাক্ষাৎকালে রোসাটোম মহাপরিচালক রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন এবং এ বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান নিয়েও আলোচনা করেন তাঁরা।
করোনা মহামারি এবং বৈশ্বিক সংকটের মধ্যেও রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ এগিয়ে নেওয়ায় সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ দেন প্রধানমন্ত্রী।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে প্রযুক্তিগত ও আর্থিক সহায়তা প্রদান করায় রাশিয়াকে ধন্যবাদ দেন শেখ হাসিনা।
মহান মুক্তিযুদ্ধে এবং যুদ্ধ পরবর্তী বাংলাদেশ পুনর্গঠনে রাশিয়ার সহায়তার কথা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী। আগামীতেও রাশিয়ার সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান, প্রধানমন্ত্রীর অ্যাম্বাসেডর অ্যাট লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ড. শহীদ হোসাইন এবং রাশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ১২ এপ্রিল রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান রোসাটমের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সে সময় মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ঘোষণায় বলা হয়, ইউক্রেন যুদ্ধে মদদ দেওয়ায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মূল ঠিকাদার রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান রোসাটমকে। কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান রোসাটমের সঙ্গে সম্পর্ক রাখলে পড়তে পারে নিষেধাজ্ঞায়- এমন বার্তাও দিয়েছিল ওয়াশিংটন।
রোসাটমকে নিষেধাজ্ঞার ফলে তখন রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রর বাস্তবায়ন নিয়ে বারবার অনিশ্চয়তার কথা আসছিল। তবে ঢাকা ও মস্কোর পক্ষ থেকে বলা হচ্ছিল, যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা রূপপুর প্রকল্পে কোনো প্রভাব ফেলবে না। বাংলাদেশের প্রথম পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মিত হচ্ছে রুশ সহায়তায়।