Google search engine

চট্টগ্রামে আজাদ তালুকদার ছিলেন অকুতোভয় সাংবাদিক: তথ্যমন্ত্রী

চট্টগ্রামে প্রয়াত আজাদ তালুকদার মেধাবী, লড়াকু ও অকুতোভয় সাংবাদিক ছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি কখনও অন্যায়-লোভের কাছে হার মানেনি; যোগ করেন ড.হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, অনেক ঘটনা অনেকের চোখ এড়িয়ে গেলেও আজাদ তালুকদার হুমকি, রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে সেটি প্রকাশ করেছেন এবং যা প্রকাশ করেছেন সত্যিটা প্রকাশ করেছে। তাঁর মধ্যে ছিল অদম্য কর্মস্পৃহা।

০৬ অক্টোবর শুক্রবার সকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে একুশে পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক নজরুল কবির দীপু’র সভাপতিত্বে ও একুশে পত্রিকার প্রতিনিধি সাংবাদিক আবছার রাফির সঞ্চালনায় একুশে পত্রিকা পরিবার আয়োজিত প্রয়াত সম্পাদক আজাদ তালুকদারের শোকসভায় এইসব কথা বলেন ড. হাছান মাহমুদ।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, একটি পত্রিকা দাঁড় করাতে এবং পাঠক প্রিয় গড়ে তুলতে কত কষ্ট তা আমি দেখেছি। কারণ আমি শুরু থেকে আজাদ তালুকদারের ‘একুশে পত্রিকা’র সঙ্গে ছিলাম। একুশে পত্রিকায় অনেক ক্ষমতাধর ব্যক্তির বিরুদ্ধেও রিপোর্ট হয়েছে। আজাদের লেখালেখিতে আমাকেও অনেক সময় অনেকের কথা শুনতে হয়েছে। ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালের বেডে মৃত্যুর আগেও তিনি দৃঢ় মনোবল নিয়ে কাজ করেছেন। কিন্তু তিনি জানতেন ধীরে ধীরে তাঁর জীবন প্রদীপ নিভে যাচ্ছে। এরপরও এক মুহূর্তের জন্যও ক্যান্সার রোগও তার কাজ থামাতে পারেনি। এক লড়াকু সৈনিকের মতো যুদ্ধে লিপ্ত ছিলেন তিনি।

বর্তমানে অনেকে নিজেদের পুঁজির পাহারাদার হিসেবে মিডিয়ার মালিক হতে চান এমন সমালোচনা করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, এখন তো অনেকেই মিডিয়া হাউজ করেন নিজের ব্যবসা টিকিয়ে রাখার জন্য, নিজের অবৈধ পুঁজিকে টিকিয়ে রাখার জন্য৷ নিজেদের স্বার্থ হাসিল করতেই আজকাল অনেকে মিডিয়ার মালিক হতে চান, নিজেদের পুঁজি পাহারাদার বানানোর জন্য। সেখানে আজাদ তালুকদার কারও কাছে বিক্রি হননি। তাঁর জীবনে অনেক কষ্ট করেছেন। আমি তাঁর জীবনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দেখেছি। কতটা লড়াই সংগ্রাম করে তিনি নিজের পত্রিকা দাঁড় করিয়েছেন। তিনি একা লড়াই করে, বহু কষ্টে, বহু শ্রমে-ঘামে, মেধায়, মননে একুশে পত্রিকাকে আজকের এ জায়গায় নিয়ে এসেছেন। শুধু দাঁড় করাননি তিনি একুশে পত্রিকাকে পাঠকপ্রিয় করে তুলেছেন। এটি মোটেও সহজ কাজ নয়। কোনো বড় গ্রুপের কাছে বিক্রি না হয়ে নিজের স্বকীয়তায় পত্রিকা গড়ে তুলেছেন, প্রতিষ্ঠিত করেছেন।

হাছান মাহমুদ আরও বলেন, মৃত্যুর ঠিক আগ মুহূর্তে আজাদ তালুকদারকে দেখতে ঢাকার বিআরবি হাসপাতালে তিনি গিয়েছেন। তখন তার সাথে কথা হয়। তিনি তখন মৃত্যুর প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন৷ মৃত্যু পরবর্তী জীবন নিয়েও কয়েকটি কথা বলেছেন। একজন অকুতোভয় সাংবাদিক হিসেবে যেসব গুণ থাকা দরকার তার সবকটি আজাদ তালুকদারের মধ্যে বিদ্যমান ছিল। যেটি কেউ সাহস করেননি। সেটি সাহস করে দেখিয়েছিলেন আজাদ তালুকদার। তাঁর মধ্যে তিনটি গুণ ছিল, লড়াকু, অকুতোভয়, মেধাবী৷ যেখানে দেশের গড় আয়ু ৭৩ বছর। সেখানে এই তিন গুণে গুণান্বিত আজাদ তালুকদারের অকালে চলে যাওয়া আমাদের জন্য অত্যন্ত বেদনার।

বর্তমানে একুশে পত্রিকা পরিচালনার সাথে যারা জড়িত তারা সেই ধারা অব্যাহত রাখবেন, আমি এটা আশা করি৷ আমি মরহুম আজাদ তালুকদারের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।’ যোগ করেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

শোকসভায় অন্যান্যের মধ্যে চট্টগ্রাম বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজির উপাচার্য অধ্যাপক ড. ওবায়দুল করিম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক ড. মো. সেকান্দর চৌধুরী, রাঙ্গুনিয়া পৌরসভার মেয়র শাহজাহান সিকদার, সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের সদস্য কলিম সরওয়ার, বিএফইউজে’র ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব কাজী মহসিন, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আলী আব্বাস, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রুবেল খান, সাধারণ সম্পাদক ম. শামসুল ইসলাম, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক দেবদুলাল ভৌমিক ও সহসভাপতি চৌধুরী ফরিদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

 

- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ