দীর্ঘ ১১ মাস পর চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় নির্মমভাবে খুন হওয়া শিশু আয়াত হত্যা মামলার অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এগারো মাস আগে শিশু আয়াতকে অপহরণে পর ছয় টুকরো করে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ফেলে দেয় মামলার মূলহোতা আবীর আলী নামের এক তরুণ। এ মামলায় আবীরের ঘনিষ্ট এক তরুণকেও আসামি করা হয়েছে। অপরদিকে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার তথ্যপ্রমাণ না পাওয়ায় তরুণের বাবা-মা ও বোনকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য অভিযোগপত্রে সুপারিশ করেছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) চট্টগ্রাম মহানগরের পরিদর্শক মনোজ কুমার দে।
রবিবার (৮ অক্টোবর) চট্টগ্রাম মহানগর আদালতের প্রসিকিউশন শাখায় তদন্ত কর্মকর্তা অভিযোগপত্র ও দোষীপত্র জমা দেন। মামলার ধার্য তারিখে সেগুলো আদালতে দাখিল করা হবে বলে পিবিআই কর্মকর্তা মনোজ জানিয়েছেন।
পিবিআই জানিয়েছে, খুন ও লাশ গুমের অভিযোগে দণ্ডবিধির ৩০২ ও ২০১ ধারায় দাখিল করা আবিরের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্রে ছয়জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। ঘটনার পর আবিরের বাবা আজাহার আলী, মা আলিমনা আলো এবং তার কিশোরী বোনকেও গ্রেফতার করেছিল। তবে তদন্তে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার তথ্যপ্রমাণ না পাওয়ায় তাদের অব্যাহতির সুপারিশ করা হয়েছে।
এদিকে গ্রেফতারের পর আবীর আলীর দেওয়া তথ্যে পিবিআই তার ঘনিষ্ঠ ১৭ বছর বয়সী এক কিশোরকে ৬ ডিসেম্বর গ্রেফতার করেছিল। ওই কিশোর নগরীর ইপিজেড থানার বন্দরটিলা নয়ারহাট এলাকায় আয়াতের বাসার অদূরে ‘ভাই ভাই হোটেলের’ মেসিয়ার হিসেবে কর্মরত ছিল। একই এলাকার সাইফুল কলোনিতে ব্যাচেলর বাসায় ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করতো।
৭ ডিসেম্বর ওই কিশোর আদালতে জবানবন্দি দিয়ে আয়াতকে অপহরণ ও হত্যার বিষয়ে অবগত থাকার কথা স্বীকার করে। জবানবন্দিতে সে জানায়, মানুষ সন্দেহ করবে- এই ভয়ে আয়াতকে মেরে ফেলার বিষয়টি জানার পরও সে কাউকে কিছু জানায়নি। এরপর থেকে গ্রেফতারের আগ পর্যন্ত সে নিজের মতো করে স্বাভাবিক থাকে।
পিবিআই জানায়, দণ্ডবিধির ২০১ ধারায় কিশোরকে অভিযুক্ত করে আদালতে পৃথক দোষীপত্র দাখিল করা হয়েছে। কিশোর বয়সী হওয়ায় তার বিচার পৃথক আদালতে চলবে।
গত বছরের ১৫ নভেম্বর বিকেলে নগরীর ইপিজেড থানার দক্ষিণ হালিশহর ওয়ার্ডের নয়ারহাট এলাকার বাসিন্দা সোহেল রানার চার বছর ১১ মাস বয়সী মেয়ে আলীনা ইসলাম আয়াত নিখোঁজ হন। ঘটনা জেনেই ছায়া তদন্তে নামে পিবিআই।