আগামীর স্মার্ট বাংলাদেশ পরিচালনার জন্য শিশু কিশোরদের সেভাবে গড়ে তোলার কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
১৮ অক্টোবর বুধবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘শেখ রাসেল দিবস ২০২৩’ উদযাপন ও শেখ রাসেল পদক বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আজকে আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি। আগামী দিনে আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ করব। আজকের শিশু কিশোররাই আগামীর স্মার্ট বাংলাদেশ চালাবে। আমি সেভাবে তোমাদের গড়ে তুলতে চাই।
“আমরা চাই, আমাদের শিশুরা আরো উন্নত হবে। আজকের বাংলাদেশ ডিজিটাল বাংলাদেশ। আজ থেকে ১৪ বছর আগের বাংলাদেশ কেমন ছিল? ’৯৬ সালে সরকারে এসে ডিজিটাল সিস্টেমের ব্যবস্থা করেছি, ইন্টারনেটের ব্যবস্থা করেছি। ২০০৯ এর পর থেকে আজকে পর্যন্ত ডিজিটাল বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলেছি। আমরা শান্তি চাই, আমরা দেশের উন্নতি চাই, দেশে মানুষকে আমরা সেভাবে গড়তে চাই।”
সরকারপ্রধান বলেন, “আমাদের শিশুরা লেখাপড়া শিখবে। এখানে অনেক শিশু রয়েছো, তোমারা গুরুজনের কথা মেনে চলবে, বাবা-মায়ের কথা মেনে চলবে। তোমরা লেখাপড়া শিখবে। একটা কথা মনে রাখবে, ধনসম্পদ কিছু থাকবে না, শুধু শিক্ষাটা থাকবে। শিক্ষাটাই মূল শক্তি।
“আমাদের ছেলে-মেয়েদেরকে ছোটবেলা থেকে একটা কথাই শিখিয়েছি, টাকা-পয়সা, সম্পদ আমরা কিছুই রেখে দিতে পারব না, তোমার আর লেখাপড়া শিখতে হবে, তারা বিশ্বের বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রি নিয়েছে। আমাদের সরকারের নানা ধরনের উন্নয়নের সাথে তো আছে, কাজ করে যাচ্ছে কিন্তু পর্দার আড়ালে। তারা নিজেদেরকে প্রকাশও করে না, সামনেও আসে না। তারা কাজ করে যাচ্ছে দেশের জন্য, দেশের স্বার্থে। দেশের কল্যাণে আমাকে সহযোগিতা করে যাচ্ছে।”
শেখ হাসিনা বলেন, “আমাদের শিশুরা কিন্তু তাড়াতাড়ি শেখে। আমরা বৃদ্ধরা শিখতে গেলে কোথায় বোতাম টিপতে হবে সেটা নিয়ে চিন্তা করতে হয়, আর ওরা কিন্তু ভেতর থেকে শিখে ফেলে।”
চার বছরের নাতির কাছ থেকেও প্রযুক্তি শেখার কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ও আমাকে শেখায় যে, তুমি এটা (কম্পিউটার) টিপতে থাকো, টিপতে টিপতে পেরে যাবা। আর মোবাইল ফোনের পিন নম্বরটা, শুনলে অবাক হবেন, তারা গেম খেলবে এ কারণে আমি তাদেরকে পিন দেব না। আমি লুকিয়ে পিন দিচ্ছি, আর আমার চশমার রিফ্লেকশন থেকে আমার নাতি সে নম্বর নিয়ে নিয়েছে। আমাকে বলে, ‘আমি জেনে গেছি তুমি কী করো।’ তো এরা এত স্মার্ট।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের এই ছোট্ট সোনামনিরা আমার স্মার্ট বাংলাদেশের স্মার্ট সৈনিক হবে। এটাই তো আমি চাই।”
১৯৬৪ সালের ১৮ অক্টোবর জন্ম হয়েছিল শেখ রাসেলের। বেঁচে থাকলে বুধবার তার ৫৯ বছর পূর্ণ হত।
১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার করে যে ঘাতক চক্র, ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র রাসেলকেও সেদিন তারা রেহাই দেয়নি।
তখন বিদেশে থাকায় প্রাণে বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুর দুই মেয়ে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। বঙ্গবন্ধুকে জন্মস্থান গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়ায় দাফন করা হলেও রাসেলসহ পরিবারের অন্য সদস্যদের ঢাকার বনানী কবরস্থানে দাফন করা হয়।
শেখ রাসেলের জন্মদিবস এ বছর তৃতীয়বারের মত ‘শেখ রাসেল দিবস’ হিসেবে উদযাপন করা হচ্ছে রাষ্ট্রীয়ভাবে। ‘শেখ রাসেল দীপ্তিময়, নির্ভীক নির্মল দুর্জয়’ প্রতিপাদ্যে সারা দেশে পালিত হচ্ছে নানা কর্মসূচি।