পণ্য পরিবহন পথ সুগম করতে খুলনা থেকে বাগেরহাটের মোংলা বন্দর পর্যন্ত নির্মিত রেলপথে পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেন চালানো হবে। খুলনা-মোংলা রেলপথ চালুর মধ্যে দিয়ে মোংলা বন্দরে নৌ, সড়ক ও রেলপথের মাল্টিমোডাল যোগাযোগ ব্যবস্থা চালুর পাশাপাশি পণ্য পরিবহন অনেকটা সহজ হবে বলে জানিয়েছেন মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মীর এরশাদ আলী।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই রেলপথের মাধ্যমে মোংলা বন্দরের পণ্য একদিকে যেমন দেশের মধ্যে কম খরচে পরিবহন করা যাবে; অন্যদিকে ভারত, নেপাল ও ভুটান এই পথ ব্যবহার করে পণ্য আমদানি-রপ্তানি করবে। ফলে দক্ষিণের অর্থনীতির অগ্রগতিতে রেলপথটি বড় ভূমিকা রাখবে।
৩০ অক্টোবর, সোমবার দুপুরের পর জেলার ফুলতলা থেকে একটি ট্রেন পরীক্ষামূলকভাবে মোংলায় যাবে বলে জানিয়েছেন খুলনা-মোংলা রেললাইন প্রকল্পের প্রধান প্রকৌশলী আহমেদ হোসাইন মাসুম।
তিনি বলেন, রেললাইনের কিছু কাজ বাকি রয়েছে, সেগুলো দ্রুত সম্পন্ন করা হবে। আগামী ১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভার্চুয়ালি এই রেলপথের উদ্বোধন করবেন। তবে যাত্রী ও পণ্যবাহী ট্রেন চলাচলের জন্য আরও দেড় মাস অপেক্ষা করতে হবে বলে তিনি জানান।
খুলনা জেলা প্রশাসক মো. মনিরুজ্জামান তালুকদার বলেন, পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় পর রাজধানীর সঙ্গে সরাসরি যুক্ত হয়েছে এ অঞ্চলের ২১টি জেলা।
এখন খুলনা-মোংলা রেলপথ চালু হলে আর্থসামাজিক অগ্রগতির পাশাপাশি সরকারি রাজস্ব বাড়বে; সৃষ্টি হবে নতুন নতুন কর্মসংস্থান এবং পর্যটন শিল্পেরও বিকাশ ঘটবে বলে জানান জেলা প্রশাসক।
খুলনা-মোংলা রেললাইন নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে। রেলপথটির দৈর্ঘ্য প্রায় ৯০ কিলোমিটার। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান লার্সেন অ্যান্ড টুবরো এবং ইরকন ইন্টারন্যাশনাল। এ প্রকল্পে ব্যয় হয়েছে ৪ হাজার ২৬০ কোটি টাকা।
খুলনা বিভাগীয় বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) পরিচালক প্রণব কুমার রায় বলেন, “পদ্মা সেতুকে ঘিরে গত কয়েক বছর দক্ষিণাঞ্চলে নতুন নতুন শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে উদ্যোক্তারা বিনিয়োগে আগ্রহী হচ্ছেন। খুলনা-মোংলা রেলপথ উদ্বোধনের পর এ অঞ্চলের আর্থসামাজিক অগ্রগতি আরও বাড়বে।
“গত পাঁচ বছরে খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় ১১১টি ছোট-বড় ও মাঝারি শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। বিনিয়োগ হয়েছে পাঁচ হাজার ৮৩১ কোটি টাকা। নতুন কর্মসংস্থান হয়েছে ১৪ হাজার ৯২৫ জনের।”