Google search engine

৮ বছর অপেক্ষার অবসান, বন্দরে নতুন কনটেইনার টার্মিনালের যাত্রা

দীর্ঘ আট বছর পর চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ নতুন একটি পূর্ণাঙ্গ কন্টেইনার টার্মিনালের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছে।

১৪ নভেম্বর, মঙ্গলবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বহুল প্রতীক্ষিত পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনালটি (পিসিটি) ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করেন। এর মাধ্যমে ২০১৫ সালের অক্টোবরে নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনালের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের আট বছর পর নতুন আরেকটি কন্টেইনার টার্মিনালের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হলো। একইসময়ে বন্দরের আরেক মেগা প্রকল্প বে-টার্মিনালের মাস্টার প্ল্যানের মোড়ক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী।

এই টার্মিনালের ইয়ার্ডে একসঙ্গে সাড়ে চার হাজার একক কন্টেইনার রাখা যাবে । এই কন্টেইনার টার্মিনালে থাকছে ৫৮৩ মিটার দৈর্ঘ্যরে তিনটি জেটি। যেখানে সাড়ে নয় মিটার গভীরতার এবং ১৯০ মিটার দৈর্ঘ্যরে জাহাজ ভেড়ানো যাবে। এছাড়া রয়েছে ১টি ২০৪ মিটার ডলফিন জেটি। সেই জেটিতে তেলবাহী জাহাজ ভেড়ানো হবে। থাকছে ৮০ হাজার বর্গমিটার আরসিসি পেভমেন্ট/ইয়ার্ড, ৪২০ মিটার ফ্লাইওভার, এক দশমিক ২০ কিলোমিটার চার লেনের রাস্তা, টাগবোট, পাইলট বোট, স্পিড বোট, পেট্রোল পিকআপ ইত্যাদি।

২০১৭ সালের ১৩ জুন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়নাধীন পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল শীর্ষক প্রকল্পটি এক হাজার ৮৬৮ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে অনুমোদিত হয়। তখন এর বাস্তবায়নে সময়সীমা নির্ধারিত ছিল ২০১৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। পরবর্তী সময়ে চট্টগ্রাম বন্দরের পক্ষ থেকে প্রাক্কলিত ব্যয় এক হাজার ৩৯৩ কোটি ৪১ লাখ টাকা এবং প্রকল্পের মেয়াদ ২০২১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বৃদ্ধির প্রস্তাব করে আরডিপিপি পাঠানো হয়।

প্রায় দেড় বছর আগে পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনালটি প্রস্তুত হয়ে গেলেও এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়নি। বিদেশি অপারেটর দিয়ে এই টার্মিনাল পরিচালনার সিদ্ধান্তের পর বিভিন্ন দেশের নামি সব প্রতিষ্ঠানের সাথে চলে দর কষাকষি। এসবের মধ্যে একটি প্রতিষ্ঠানকে বাছাই করে তাদের সাথে চুক্তি করতেই দেড় বছর পার হয়ে গেছে। তবে এর মাঝে ওই জেটিতে সরকারি চাল খালাসের কাজ চলেছে।

বন্দর ব্যবহারকরীদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল বিদেশি অপারেটর নিয়োগের আগে প্রস্তুত থাকা এই টার্মিনালটি বন্দর নিজে পরিচালনা করে জাহাজ ভেড়ানো শুরু করে দিক। তবে এবার সেই আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনটি হতে যাচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে।

সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিদেশি অপারেটর নিয়োগ দিয়ে তাদের মাধ্যমে চালু করা হবে এই পিসিটি। অনেক দেশ তাতে আগ্রহ দেখালেও ২০২২ সালের ২৮ জুলাই সৌদি আরবের জেদ্দা ইসলামিক বন্দরের রেড সি গেটওয়ে টার্মিনালকেই অপারেটর হিসেবে বাছাই করে তাদের জানিয়ে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে ১৮ আগস্ট বিদেশি ওই প্রতিষ্ঠানটি তাদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটের মাধ্যমে পিসিটির কাজ পাওয়ার বিষয়টি জানায়।

তবে তাদের সাথে আর্থিক লেনদেন কীভাবে হবে তা নির্ধারণ করতে তৃতীয় পক্ষ হিসেবে ওয়ার্ল্ড ব্যাংক গ্রুপের ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স কর্পোরেশনকে (আইএফসি) দায়িত্ব দেওয়া হয়। ওই আগস্ট মাসেই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) কর্তৃপক্ষ ‘পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল প্রস্তুতকরণ, পরিচালনা এবং রক্ষণাবেক্ষণ’ পিপিপি প্রজেক্টের জন্য আইএফসির সঙ্গে ‘ট্রানজেকশন এডভাইজার সার্ভিস এগ্রিমেন্ট’ চুক্তি স্বাক্ষর করে। প্রতিষ্ঠানটি চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ও রেড সি গেটওয়ে টার্মিনালের সাথে বৈঠক করে একটি রিপোর্ট জমা দেয়। যা বর্তমানে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ও পিপিপি কর্তৃপক্ষের বিবেচনাধীন রয়েছে।

- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ