ভিয়েতনামে চীনের বিনিয়োগ বেড়েছে। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র দেশটিতে বিনিয়োগ ও বাণিজ্য দুটোই কমিয়েছে। সম্প্রতি এক অফিশিয়াল ডাটায় এ তথ্য উঠে এসেছে। বিশ্বের এ দুটি বৃহত্তম অর্থনীতি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটিতে প্রভাব বিস্তারে দীর্ঘদিন ধরে লড়াই করে আসছে। খবর রয়টার্স।
বিশ্বব্যাপী সরবরাহ চেইনে একটি অন্যতম প্রধান সংযোগকারী দক্ষিণ চীন সাগর বরাবর প্রসারিত ম্যানুফ্যাকচারিং হাব, যা প্রায়ই চীন ও মার্কিনদের ওপর নির্ভর করে।
অর্থনৈতিক দিক থেকে ভিয়েতনামে দুটি দেশের মধ্যে চীন শীর্ষে বলে মতামত দেন বিশেষজ্ঞরা। অন্যদিকে মার্কিন বাণিজ্য নীতি আংশিকভাবে প্রভাব ফেলছে। ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের মধ্যে উত্তেজনা এবং গত কয়েক বছরে চীনের ওপর মার্কিন নেতৃত্বাধীন বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা ভিয়েতনামে চীনা বিনিয়োগকে উৎসাহিত করেছে।
চলতি বছরের প্রথম ১১ মাসে চীন ও হংকং থেকে ভিয়েতনামে নিবন্ধিত বিনিয়োগের পরিমাণ বেড়ে ৮২০ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে। ভিয়েতনামের সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, গত বছরের একই সময়ের তুলনায় চীনের বিনিয়োগ দ্বিগুণ হয়েছে। চীনের মহামারীজনিত বিধিনিষেধ দেশটিকে ভিয়েতনামের সবচেয়ে বড় বিনিয়োগকারী করে তুলেছে।
অন্যদিকে ভিয়েতনামে মার্কিন নিবন্ধিত বিনিয়োগ ২০২২ সালে ৭০ কোটি ডলার থেকে এ বছরে ৫০ কোটি ডলারে নেমে এসেছে। যার মাধ্যমে দেশটিকে বিনিয়োগের দিক থেকে দশম স্থানে নিয়ে গেছে। এর আগের অবস্থানে রয়েছে প্যাসিফিক অফশোর সেন্টার সামোয়া ও নেদারল্যান্ডস।
দেশ দুটির (ভিয়েতনাম ও আমেরিকা) দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যও কমছে। মার্কিন ভোক্তারা এ বছর জীবনযাত্রার ব্যয়ের দিক থেকে সংকটের মুখোমুখি। এছাড়া বাইডেনের ভিয়েতনাম সফরে তারা কোনো শুল্ক কমাতে সম্মত হয়নি।
আমেরিকায় ভিয়েতনামের রফতানি চলতি বছরের প্রথম ১০ মাসে ১৫ শতাংশ কমে ৭ হাজার ৯২৫ কোটি ডলারে পৌঁছেছে। যার প্রভাবে সার্বিকভাবে আমেরিকায় আমদানি কমেছে। একই সময়ে চীনে ভিয়েতনামের রফতানি ৫ শতাংশ বেড়ে ৫ হাজার ডলারে পৌঁছেছে।
শক্তিশালী অর্থনৈতিক বিনিময় সত্ত্বেও দক্ষিণ চীন সাগরে সীমানা নিয়ে বিরোধের কারণে চীনের সঙ্গে ভিয়েতনামের সম্পর্ক এখনো জটিল। চীনবিরোধী মনোভাব ভিয়েতনামের জনগণের মধ্যেও রয়েছে। যার কারণে দেশটিতে এ-সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে ঘন ঘন বিক্ষোভ হয়। আর এ সমস্যাগুলোর অন্যতম প্রধান কারণ ভিয়েতনামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি। যার কারণে চীনা প্রতিষ্ঠানগুলো বিশেষভাবে উপকার পাবে।
বেশকিছু ভিয়েতনামভিত্তিক ব্যবসায়িক পরামর্শদাতা মার্কিন বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বাড়ানোর দিকে ইঙ্গিত দিয়েছেন এবং উল্লেখ করেছেন যে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিতে সময় লাগতে পারে।