Google search engine

ঘন কুয়াশার কারণে বেঁচে গেল হাজারো যাত্রী

পৌষের আগে ঘন কুয়াশার কারণে বেঁচে গেলো হাজারো যাত্রীর প্রাণ। উত্তরে যেমন শীত জেঁকে বসেছে তেমনি কুয়াশায় অন্ধকার চারিদিক। দিনের বেলায় সূর্যের আলো না থাকায় হেড লাইট জ্বালিয়ে ধীরগতিতে চলছে গাড়ি। ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনটি ঘন কুয়াশার কারণে ধীরগতিতে চলছিল। অপরদিকে রেললাইন কেটে বড় দুর্ঘটনার ফাঁদ পেতে রাখে দুর্বৃত্তরা। ধীরগতিতে থাকা ট্রেনটি ঘটনাস্থলে পৌঁছালে ঘটে দুর্ঘটনা। এ ঘটনায় একজন নিহত ও কমপক্ষে দশ জন আহত হয়েছেন। তবে ট্রেনের গতি বেশি থাকলে হয়তো ঝরতো হাজারও প্রাণ।

১৩ ডিসেম্বর,বুধবার ভোরে ঢাকা-ময়মনসিংহ রেলপথের গাজীপুরের বনখড়িয়া (চিলাই নদীর) ব্রিজে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

ময়মনসিংহ থেকে ঢাকায় যাওয়া ওই ট্রেনের যাত্রী রফিকুল ইসলাম বলেন, তিনি ইঞ্জিনের পরের বগিতেই ছিলেন। ঘন কুয়াশা থাকায় ট্রেন ধীর গতিতে চলছিল। তিনি ট্রেনে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। হঠাৎ বিকট শব্দ হলে তার ঘুম ভাঙ্গে। তখন দেখতে পান কয়েকটি বগি লাইন থেকে নিচু জমিতে পড়ে রয়েছে। অন্যান্য যাত্রীদের সঙ্গে তিনিও অনেক কষ্টে জানালা দিয়ে বের হয়ে জীবন বাঁচিয়েছেন।

তিনি বলেন, ধীরগতি থাকায় একজন নিহত হয়েছে। দ্রুতগতিতে ট্রেন চললে এ দুর্ঘটনায় আরও বড় ধরনের ঘটনা ঘটতো। ট্রেন ক্ষতিগ্রস্ত হলেও যাত্রীদের তেমন কোনও ক্ষতি হয়নি। সবার মুখে মুখে শুনছি ১০ থেকে ১৫ জন আহত হয়েছে। নিহত ব্যক্তি ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার বাসিন্দা মুরগী ব্যবসায়ী আসলাম (৩৫)। তিনি ইঞ্জিনের সঙ্গে থাকা বগির মাঝখানে বসেছিলেন। হয়তোবা ট্রেন পড়ে গেলে তিনিও পড়ে মারা গেছেন।

আরেক যাত্রী নূরুল ইসলাম বলেন, রাত ১১টায় মোহনগঞ্জ থেকে ট্রেনটি ছেড়ে আসে। তিনি ওই ট্রেনে স্ত্রীকে নিয়ে কাজের সন্ধানে ঢাকা আসছিলেন। গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুর রেল স্টেশন পার হওয়ার পরই বিকট শব্দে ট্রেনটি কাত হয়ে পড়ে। পেছনের দিকে বগিতে ছিলেন। তখন রাত আনুমানিক সোয়া ৪টা বা সাড়ে ৪টা বাজে। এ সময় যাত্রীরা চিৎকার শুরু করলে বুঝতে পারেন ট্রেনে কিছু একটা হয়েছে। পরে জানতে পারেন, ট্রেনের ইঞ্জিন পড়ে গেছে লাইন থেকে।

গাজীপুরে ট্রেন দুর্ঘটনার কারণে ঢাকা-ময়মনসিংহ-ঢাকা রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে ময়মনসিংহ অঞ্চলের ট্রেনগুলো যেন নিরবচ্ছিন্নভাবে ঢাকা থেকে চলাচল করতে পারে সেজন্য রুট পরিবর্তনের ব্যবস্থা করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। ময়মনসিংহ অঞ্চলের ট্রেনগুলো ঢাকা-বিমানবন্দর-টঙ্গী-ভৈরব-কিশোরগঞ্জ-ময়মনসিংহ রুটে চলাচল করছে। এই ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হুমায়ুন কবিরকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই তদন্ত কমিটিকে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।

- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ