নৌকায় ভোট দিলে দেশের উন্নয়ন হয়। এ নৌকা নূহ নবীর আমল থেকে মানুষকে রক্ষা করে আসছে। বিএনপি নির্বাচন চায় না। আপনারা ৭ তারিখ সকাল ৮টায় গিয়ে নৌকায় ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবেন। জাতির পিতা এ দেশের জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। তারা শুধু বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে হত্যা করেছিল। বাংলাদেশের মানুষ এক সময় খুদা-দরিদ্রতায় ভুগছে। সেখান থেকে দেশকে মুক্ত দেশ করেছি। আওয়ামী লীগ সরকারই দেশকে দরিদ্রতা মুক্ত করেছে। দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করেছি; যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, ডিসেম্বর আমাদের বিজয়ের মাস। জাতির পিতার নেতৃত্বে এ মাসে আমরা বিজয় অর্জন করেছি। জানুয়ারি জাতীয় নির্বাচন। সেই লক্ষ্যে এখানে উপস্থিত হয়েছি।
২৯ ডিসেম্বর, শুক্রবার নগরীর বঙ্গবন্ধু উদ্যানের নির্বাচনী জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
বিএনপির কঠোর সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি একটি সন্ত্রাসী দল। তারা সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ করে মানুষকে অত্যাচার করছে। সাধারণ মানুষকে অত্যাচার করে তাদের নিজেদের ভাগ্য গড়েছে। নিজেদের ভাগ্য গড়তেই তারা ক্ষমতায় যেতে চায়।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি আমাকে ২০০৭-২০০৮ পর্যন্ত গ্ৰেফতার করে রেখেছে। আমাকে আটকে রেখে দেশের উন্নয়নে বাধার সৃষ্টি করতে চেয়েছে, কিন্তু পারেনি। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে দেশের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছি। আগে যে মানুষ এক বেলা খেতে পারতো তারা এখন তিন বেলা খেতে পারছে।
সারাদেশ বিনা পয়সায় বই দিচ্ছি। সামাজিক নিরাপত্তা, বয়স্ক ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা দিয়েছি। কোভিডকালীন সময়ে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি। কৃষক এখন ১০ টাকায় ব্যাংক একাউন্ট খুলতে পারে। তাদের সব উপকরণ বাড়ি পৌঁছে দিচ্ছি। তাদের পিছনে ২৫ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বরিশাল এক সময় শস্যভাণ্ডার ছিল। আবার এ বরিশালকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করা হবে। বরিশালে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় করে দেব। ঢাকা থেকে বরিশাল আসতে প্রতিটি নদীর ওপর ব্রিজ করে দিয়েছি। অবহেলিত বরিশাল এখন অনেক উন্নতি হয়েছে। এখানে নৌ-বাহিনীর ঘাঁটি করেছি। দক্ষিণাঞ্চলে সোলার প্যানেল, পায়রা বন্দরসহ বিভিন্ন উন্নয়ন করেছি।
ভোলার গ্যাস বরিশালে আনার ব্যবস্থা করবো। কেউ ভূমিহীন থাকলে তাদের বিনা পয়সায় ঘর করে দেওয়া হবে। দেশে একটা মানুষও দরিদ্র থাকবে না।
তিনি বলেন, প্রতিটি এলাকায় মসজিদ, মন্দির করে দিয়েছি। তাদের বেতন ভাতা বাড়িয়েছি। শিক্ষার্থীদের অনলাইনে লেখা পড়া করার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। প্রজন্মের পর প্রজন্ম যেন চলতে পারে সেই ব্যবস্থা করে দিয়েছি। যুব সমাজের জন্য সহজে ব্যাংক থেকে ঋণের ব্যবস্থা করে দিয়েছি।
দেশে যে রাস্তা করে দিয়েছি তা দেখলে মনে হবে বিদেশি কোনো রাস্তা। বরিশালবাসীর জন্যও সুখবর আছে। ভাঙ্গা থেকে বরিশাল হয়ে পায়রা পর্যন্ত ৬ লেনের রাস্তা করে দেব। যা ইতোমধ্যে অধিগ্রহণের কাজ শুরু হয়েছে। বাংলাদেশ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ।
শেষে তিনি বরিশালের ৬ আসনের আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীদের নামের তালিকা ঘোষণা করে তাদের নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করার আহ্বান জানান। আওয়ামী আসলে দেশ সামনের দিকে এগিয়ে যায়। যত বাধাই আসুক আমি সোনার বাংলা গড়তে চাই।
বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বরিশাল ১ আসনের সংসদ সদস্য আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহর সভাপতিত্বে জনসভায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, উপদেষ্টা মণ্ডলির সদস্য আমির হোসেন আমু, ওয়ার্কার্স পার্টির চেয়ারম্যান রাশেদ খান মেনন, আবদুল হাফিজ মল্লিক, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী স ম রেজাউল করিম, পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ-ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম, আওয়ামী-যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ, জাতীয় পাটির (মঞ্জু) সভাপতি আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, সিটি মেয়র আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত, শাজাহান ওমর বীর উত্তম, আলীগের দপ্তর সস্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, আন্তজাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মী আহমেদ, বরিশাল মহনগর আলীগের সভাপতি এ কে এম জাহাঙ্গির, সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
